অতিরিক্ত রোগা অথবা অতিরিক্ত মোটা হওয়া উভয়ই স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদি আপনি মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে জানতে চান, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলটি আপনাকে মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে ১৬টি কার্যকরী টিপস প্রদান করবে। মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন।
আজকের আর্টিকেলটিতে আপনি জানতে পারবেন মোটা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে? প্রাকৃতিক ভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায়? মোটা হওয়ার জন্য সকাল বিকাল ও দুপুরের খাদ্য তালিকা? মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মোটা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে জেনে নিন
পুষ্টিবিদ মাসুমা চৌধুরীর মতে, যদি কারো বিপাক ক্রিয়া, থাইরয়েডের সমস্যা এবং করোনারি রোগ থাকে, তাহলে এই পরিস্থিতিতে সাপ্লিমেন্ট ঠিকই কাজ করতে পারে, তবে সাধারণ খাবার সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। এ ধরনের রোগের কারণ হতে পারে, যার জন্য খাদ্য ঠিকমতো শরীরের ওপর প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়।
এই ধরনের রোগসমূহের উপস্থিতি সনাক্ত করার জন্য বছরে অন্তত দুইবার স্বাস্থ্য চেকআপ করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এগুলো আগে থেকেই সনাক্ত করা গেলে সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হয়।
যদি কোনো ব্যক্তি মোটা না হয়, তবে তার পেছনে কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকতে পারে, যেমন বিপাক ক্রিয়ার দ্রুততা, থাইরয়েডের অতিরিক্ত কার্যক্ষমতা, বা কোনো ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা। এই কারণে, নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং নিয়মিত চেকআপ করানো অত্যন্ত জরুরি। চলুন জেনে নেয়া যাক মোটা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে -
- থাইরয়েড সমস্যা: যদি কারো থাইরয়েড গ্ল্যান্ড অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে উঠে (হাইপারথাইরয়েডিজম), তাহলে তার বিপাকীয় হার বেড়ে যায়, যা শরীরের ক্যালরি খরচ বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন কমিয়ে দেয়।
- ডায়বেটিস (টাইপ ১): টাইপ ১ ডায়াবেটিস হলে শরীরের ইনসুলিন উৎপাদন কমে যায় বা একদমই হয় না। ফলে শরীর নিজের পেশি ও ফ্যাট ভেঙে শক্তি উৎপাদন করে, যা ওজন কমার কারণ হতে পারে।
- ক্যান্সার: ক্যান্সার বা ক্যান্সার টিউমারের কারণে শরীরের বিপাকীয় হার বেড়ে যায়, যার ফলে অনেক ক্যালরি পুড়ে যায় এবং দ্রুত ওজন কমে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিশ্রম: যারা দৈনিক অনেক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করেন, তাদের শরীরের বিপাকক্রিয়া ভালো থাকে, যা ক্যালরি বার্নের হার বাড়িয়ে দেয় এবং ওজন কমার কারণ হতে পারে।
- বিষন্নতা: বিষন্নতার কারণে অনেকের ক্ষুধা কমে যায় বা খাবার খাওয়ার রুচি হারিয়ে যায়, যার ফলে শরীরের ওজন কমতে পারে।
এই ধরনের শারীরিক সমস্যা বা অবস্থার জন্য নিয়মিত চেকআপ করানো অত্যন্ত জরুরি, যাতে সমস্যাগুলো আগে থেকেই সনাক্ত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেয়া যায়।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
যাদের শরীরের ওজন কম, তাদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি খাবার খেতে বললে তা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, কারণ তাদের পেট খুব দ্রুত ভরে যায় বা খাবারের প্রতি আগ্রহ কম থাকে। এর জন্য কিছু সহজ ও কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। তাই এখন আমরা আলোচনা করব ঘরোয়া পদ্ধতিতে মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে-
- খাবারের আগে পানি না পান করা: খাবারের আগে পানি পান করলে পেট ভরে যায় এবং খাবারের চাহিদা কমে যায়। তাই ওজন বাড়াতে চাইলে খাবারের আগে পানি পান থেকে বিরত থাকুন।
- নিয়মিত খাবার খাওয়া: দৈনিক তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি আরও তিন থেকে চারবার হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে সারাদিনে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি গ্রহণ সম্ভব হবে।
- স্বাস্থ্যকর নাস্তা: হালকা নাস্তা করার সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যকর নাস্তা নির্বাচন করুন। বাদাম, ফল, দই, পনির ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।
- মাদকাসক্তি এড়ানো: ধূমপান ও মাদকাসক্তি থেকে বিরত থাকুন। এগুলো শরীরের ক্ষতি করে এবং ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
- সঠিক পরিমাণে তেল খাওয়া: তেল খাওয়া শরীরের জন্য প্রয়োজন, তবে অতিরিক্ত তেল খাওয়া ঠিক নয়। সঠিক পরিমাণে তেল খাওয়ার চেষ্টা করুন, যা শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
- ভাজাপোড়া খাবার এড়ানো: অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, কারণ এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- প্রোটিন গ্রহণ: শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য এবং পেশি গঠনে প্রোটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিন দুধ পান করুন, কারণ দুধ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস এবং ওজন বাড়াতে সহায়ক।
- ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার: ক্যালোরি বাড়ানোর জন্য কফির সাথে ক্রিম মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালোরি যোগাবে।
- পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের ওজন কমে যেতে পারে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন।
- খাবারের সঠিক নিয়ম: খাবার খাওয়ার সময় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার আগে খান এবং তারপর শাকসবজি খান। এটি আপনার ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে ঘরোয়া উপায়ে ওজন বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। তবে ওজন বৃদ্ধির জন্য ধৈর্য্য ধরতে হবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলতে হবে।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় ১৬টি কার্যকরী টিপস
আপনি যদি স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে চান, তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, এবং জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন অপরিহার্য। নিচে কিছু কার্যকরী উপায় এবং পরামর্শ দেয়া হলো, যা অনুসরণ করলে আপনি সহজেই ওজন বাড়াতে পারবেন। এখন আমরা জানবো মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে -
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: ওজন বাড়ানোর জন্যও ব্যায়ামের প্রয়োজন আছে। ব্যায়াম করলে পেশী বৃদ্ধি পায় এবং শরীর শক্তিশালী হয়। এজন্য জিমে ভর্তি হয়ে অভিজ্ঞ ট্রেইনারের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- ডায়েটের চকলেট এবং চিজ রাখা: বাহিরের কিছু খাবার যেমন আইসক্রিম, পেস্ট্রি, বার্গার ইত্যাদি খেলে ওজন বাড়তে পারে। তবে এগুলো বেশি খেলে শরীরের ক্ষতি হতে পারে, তাই পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত।
- ঘুমানোর আগে দুধ বা মধু খাওয়া: রাতে ঘুমানোর আগে দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে শরীর ক্যালরি গ্রহণ করে এবং ওজন বৃদ্ধি করে।
- পরিমাণ মতো ঘুমানো: দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুম শরীরের সুস্থতার জন্য জরুরি। এর পাশাপাশি নিয়মিত যোগাসন করলে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে।
- টেনশন মুক্ত থাকা: ওজন বৃদ্ধিতে টেনশন মুক্ত থাকা জরুরি। টেনশন শরীরের ক্ষতি করতে পারে, তাই মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
- ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া: সকালবেলা কাজু, কিসমিস, আমন্ড ও পেস্তা খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় ফ্যাট এবং প্রোটিন পাওয়া যায়, যা ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
- বারবার খাবার গ্রহণ: প্রতি ২ ঘণ্টা পর পর কিছু খাবার গ্রহণ করলে শরীরে ক্যালরি সরবরাহ অব্যাহত থাকে, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
- বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করা: দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে চাইলে দৈনিক ৬০০-৭০০ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত।
- সঠিক নিয়মে প্রোটিন গ্রহণ করা: প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ডাল, ডিম ও দুধ খাওয়া উচিত, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- লাল মাংস খাওয়া: লাল মাংসে প্রোটিন এবং চর্বি থাকে, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
- কলা খাওয়া: কলায় শর্করা, প্রোটিন, এবং ক্যালোরি থাকে, যা ওজন বাড়াতে সহায়ক।
- খেজুর খাওয়া: খেজুরে ক্যালরি, প্রোটিন, চর্বি, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে, যা ওজন বৃদ্ধিতে কার্যকর।
- খাদ্য তালিকায় অন্যান্য খাবার: পুডিং, পনির, হাই প্রোটিন ফুড যেমন খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখলে ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
- দুপুরের খাবার তালিকা: দুপুরের খাবারে ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, এবং ডাল বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- বিকেলের খাদ্য তালিকা ও রাতের খাদ্য: বিকেলে মাখন, পিনাট বাটার, কলা, ডিম, এবং পাউরুটি খাওয়া যেতে পারে। রাতে চর্বি জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
- কার্যকরী অন্যান্য উপায়: পর্যাপ্ত ঘুম, রেস্ট ম্যানেজমেন্ট, এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক খাবার খাওয়া ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে ওজন বাড়ানোর প্রক্রিয়া সহজ এবং কার্যকর হতে পারে। তবে, যেকোনো পরিবর্তন করার আগে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রাকৃতিক ভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
মানুষের শরীরে অতিরিক্ত ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন থাকাও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যখন শরীরের ওজন অত্যন্ত কম থাকে, তখন এটি শারীরিক দুর্বলতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, এবং বিভিন্ন পুষ্টিগত ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে। এটি শরীরকে কঙ্কালসার অবস্থায় নিয়ে যেতে পারে, যা শারীরিকভাবে দুর্বল ও অসুস্থ করে তুলতে পারে।
সুষম খাদ্য শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুষম খাদ্য এমন খাদ্য যা সঠিক পরিমাণে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ভিটামিন, এবং খনিজ পদার্থ সরবরাহ করে। এটি শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে, যা ওজন বৃদ্ধি, পেশী গঠন, এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। জেনে নেয়া যাক প্রাকৃতিক ভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে-
১. মাখন ও চিনি মিশ্রণ
এক টেবিল চামচ মাখন এবং এক টেবিল চামচ চিনি মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে এটি দ্রুত ক্যালোরি প্রদান করে।
- কিভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন দুপুর এবং রাতের খাবারের ৩০ মিনিট আগে এটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এই মিশ্রণটি উচ্চ ক্যালোরি এবং চর্বি সরবরাহ করে, যা দ্রুত ওজন বাড়াতে সহায়ক।
২. দুপুরে ৪৫ মিনিট ঘুমানো (বাতঘুম)
দুপুরে ৪৫ মিনিট ঘুমানো মস্তিষ্ক ও পেশীকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে এবং শরীরের পুষ্টি গ্রহণ ক্ষমতা বাড়ায়।
- কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ: এই ঘুম শরীরের জন্য বাড়তি শক্তি যোগায় এবং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক। এটি আপনার মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
৩. ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বর্জন
ক্যাফেইন শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, যা ওজন বাড়াতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- বিকল্প হিসেবে কি করতে পারেন: ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়ের পরিবর্তে দুধ এবং কলা দিয়ে শেক তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। দুধ ও কলার শেক উচ্চ ক্যালোরি এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৪. দৈনিক কলা খাওয়া
কলা উচ্চ ক্যালোরি এবং প্রাকৃতিক শর্করা সমৃদ্ধ, যা ওজন বৃদ্ধিতে কার্যকরী।
- কিভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন অন্তত ২-৩টি কলা খাওয়ার চেষ্টা করুন। কলার শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট আপনার শরীরকে দ্রুত ক্যালোরি প্রদান করবে।
৫. কাঁচা ছোলা খাওয়া
প্রতিদিন রাতে ৫-৬টি কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে সকালে খেলে এটি শরীরের পুষ্টি বাড়ায় এবং ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- পুষ্টিগুণ: ছোলায় উচ্চ প্রোটিন, ফাইবার, এবং ভিটামিন থাকে যা পেশী গঠনে সহায়ক এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে।
৬. ডিম খাওয়া
ডিম উচ্চ প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা পেশী গঠনে সাহায্য করে এবং ওজন বাড়ায়।
- কিভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন একটি করে ডিম খান। আপনি এটি সেদ্ধ, ভাজা বা যেকোনোভাবে খেতে পারেন।
৭. কাজু বাদাম এবং কাঠবাদাম খাওয়া
বাদামগুলিতে স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং প্রোটিন থাকে, যা ওজন বাড়াতে সহায়ক।
- কিভাবে ব্যবহার করবেন: দৈনিক কাজু বাদাম এবং কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। এই বাদামগুলি আপনাকে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সরবরাহ করবে, যা আপনার শরীরকে অতিরিক্ত ক্যালোরি প্রদান করবে।
৮. পর্যাপ্ত পানি পান
পানি শরীরের মেটাবলিজম বজায় রাখে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
- পরিমাণ: প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
৯. নিয়মিত দুধ পান
দুধ প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ, যা শরীরের পেশী গঠনে সহায়ক এবং ওজন বাড়ায়।
- কিভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন সকালে ও রাতে এক গ্লাস দুধ পান করুন।
১০. মসুর ডাল খাওয়া
মসুর ডালে প্রোটিন, ফাইবার, এবং লোহা থাকে, যা পেশী গঠনে সহায়ক এবং শরীরের শক্তি বাড়ায়।
- কিভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিনের খাবারে ২-৩ বাটি মসুর ডাল যুক্ত করুন।
এই টিপসগুলো অনুসরণ করলে আপনি প্রাকৃতিকভাবে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে সক্ষম হবেন। তবে, যেকোনো নতুন খাদ্যাভ্যাস শুরু করার আগে একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
মোটা হওয়ার জন্য সকাল বিকাল ও দুপুরের খাদ্য তালিকা
সময় | খাবার |
---|---|
সকালের নাস্তা | সকালের নাস্তা দুধ, কলা, ডিম, খেজুর, কিসমিস ও পুষ্টিকর ফলমূল |
দুপুরের খাবার | দুপুরের খাবার ভাত, ডাল, লাল মাংস ( গরু, মুরগি কিংবা ছাগলের মাংস) ও সবুজ শাকসবজি |
বিকেলের হালকা নাস্তা | হালকা নাস্তা দুধ, পাস্তা, কি, মিষ্টি জাতীয় হালকা নাস্তা, বাদাম এবং স্বাস্থ্যকর তেজ জাতীয় কিছু খাবার |
রাতের খাবার | ভাত, সবুজ শাকসবজি, আলু, তেল যুক্ত এবং চর্বিযুক্ত খাবার |
সতর্কতা
ওজন কমানো বা বাড়ানোর ক্ষেত্রে নিজে নিজে খাদ্য তালিকা তৈরি করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়া সব সময় নিরাপদ নয়। প্রতিটি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্য সমস্যা, এবং পুষ্টির প্রয়োজন আলাদা হতে পারে। এজন্য একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা আপনার শরীরের বর্তমান অবস্থা, রোগ ইতিহাস, এবং পুষ্টির প্রয়োজন বিবেচনা করে সঠিক খাদ্য তালিকা তৈরি করতে পারবেন। এভাবে আপনি স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়ানো বা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করতে পারবেন, যা দীর্ঘমেয়াদে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
অন্যথায়, সঠিক জ্ঞান ছাড়া খাদ্য তালিকা তৈরি করলে অপুষ্টি, ভিটামিন বা খনিজের ঘাটতি, বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে চলা সর্বদা বুদ্ধিমানের কাজ।
মোটা হওয়ার সহজ উপায় আর্টিকেলটির শেষ কথা
আমরা সকলেই জানি পানির অপর নাম জীবন। ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস করা এবং শারীরিক যে কোন কাজেই পানির উপকারিতা অপরিসীম। তাই বেশি করে পানি পান করুন এবং নিয়মিত মোটা হওয়ার সহজ উপায়গুলো মেনে চলুন। এই টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি পাবেন সুন্দর স্বাস্থ্য। পরিশেষে, নিয়মিত নিজের যত্ন নিতে ভুলবেন না।
এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ! আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে হয়তো আপনি আপনার অজানা তথ্যগুলো খুঁজে পেয়েছেন। মোটা হওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে ১৬টি কার্যকরী টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি আর্টিকেলটির কোনো অংশে ভুল বা ত্রুটি লক্ষ্য করেন, তবে দয়া করে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনার মতামত বা অতিরিক্ত তথ্য থাকলে কমেন্ট বক্সে 👇 জানাতে ভুলবেন না। আপনার প্রতিক্রিয়া আমাদেরকে আরও উন্নত করতে সাহায্য করবে।
Comments
Post a Comment