ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় জেনে নেওয়া যাক। ইসলামে প্রতিটি বিষয়ের একটি সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে তাই ধনী হতে হলে আমাদের ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী হওয়ার উপায় গুলো জেনে তারপরে ধনী হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
আপনি যদি একজন মুসলিম ঘরের সন্তান হয়ে থাকেন এবং ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। এখানে আমরা ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী হওয়ার উপায় গুলো আলোচনা করব।
ইসলামে ধনী হওয়ার উপায়
ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। ইসলামে ধনী হওয়া এবং জীবিকার পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু বিশেষ দিক এবং নীতি রয়েছে, যা আল্লাহর পথে থেকে সফল হওয়ার জন্য অনুসরণ করতে হয়। আপনার বর্ণিত উপায়গুলোর মধ্যে কয়েকটি ইসলামে উল্লেখিত। আসুন একটু বিস্তারিতভাবে দেখি ইসলামে কীভাবে বৈধভাবে ধনী হওয়া যায়:
১. আল্লাহর কাছে দোয়া করা:
ধনী হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে শুধু ধনী হওয়ার জন্য নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং আমাদের জীবনকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য দোয়া করা উচিত। উপরে উল্লেখিত দোয়াটি এক ধরনের ইস্তিগফার, যা আমাদের পাপ ক্ষমার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত ও বরকত প্রাপ্তির পথ তৈরি করে।
২. আল্লাহর রাস্তায় দান করা:
দান বা সাদকাহ ইসলামের একটি বড় আমল। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা যা কিছু খরচ করো, আমি তার বদলে তোমাদের আরো বেশি প্রদান করবো” (সূরা সাবা, ৩৯)। এটি স্পষ্টভাবে বুঝায় যে দান করা আমাদের সম্পদের ক্ষতি করে না, বরং বরকত আনে এবং ধনসম্পদ বাড়ায়।
৩. বিয়ে করা:
বিয়ে করা ইসলামে শুধু ব্যক্তিগত জীবনকে পূর্ণ করে না, বরং এটি ধনী হওয়ার একটি মাধ্যমও হতে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন, “তাদের মধ্যে যারা বিয়ে করেন, আল্লাহ তাদেরকে সম্পদশালী করে দিবেন” (সূরা নূর, ৩২)। বিয়ে জীবনের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনে এবং অনেক সময় আর্থিক অবস্থাকে ভালো করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করতে পারে।
৪. ওযু অবস্থায় থাকা:
ওযু অবস্থায় থাকা পবিত্রতা রক্ষা করে এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যেকোনো ভালো কাজে আল্লাহর রহমত পেতে হলে পবিত্র থাকা জরুরি, এবং আল্লাহ তাআলা পবিত্রতাকে ভালোবাসেন। ওযু অবস্থায় থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক শান্তি ও মনোবল বৃদ্ধি পায়, যা কাজের সফলতার মূল কারণ হতে পারে।
৫. ব্যবসা করা:
ব্যবসা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়ের মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও ব্যবসা করতেন এবং মুসলিমদেরকে ব্যবসায় উৎসাহিত করেছেন। হালালভাবে ব্যবসা করলে তাতে বরকত হয় এবং ধনী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। "হালাল" পথে উপার্জন করা ইসলামিক শর্ত, যা শুধু ধনীই নয়, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমও।
সর্বোপরি:
ধনী হওয়ার পথে সবসময় হালাল ও বৈধ পথ অনুসরণ করতে হবে। ইসলাম ধর্মে ধনী হওয়া বা সম্পদশালী হওয়ার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র নিজের জীবনকে সমৃদ্ধ করা নয়, বরং সমাজের জন্য এবং আল্লাহর পথে খরচ করাও গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী হওয়ার উপায়
ইসলামের দৃষ্টিতে ধনী হওয়ার উপায় জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে ধনী করতে পারবো। ইসলামে হালাল উপায়ে ধনী হওয়ার জন্য ব্যবসা করা একটি চমৎকার পন্থা। নিচে উল্লেখিত বিভিন্ন ব্যবসার সুযোগগুলো সত্যিই কার্যকর হতে পারে। প্রতিটি ব্যবসার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা যাক:
১. ফলের দোকান:
ফলের দোকান একটি স্বাস্থ্যকর এবং জনপ্রিয় ব্যবসা। মেডিকেল এবং বাস স্ট্যান্ডের মতো ব্যস্ত এলাকায় খোলার মাধ্যমে আপনি সহজেই গ্রাহক আকর্ষণ করতে পারেন। এছাড়া মৌসুমি ফল এবং স্থানীয় কৃষকদের থেকে সরাসরি সংগ্রহ করলে লাভের সম্ভাবনা বাড়ে।
২. টুপি ও আতরের দোকান:
এটি একটি বিশেষ শ্রেণীর পণ্য, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে জনপ্রিয়। মসজিদ বা মাদ্রাসার পাশে দোকান দিলে সেখানে একাধিক ক্রেতা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আধ্যাত্মিক এবং ধর্মীয় পণ্য বিক্রির মাধ্যমে আপনি ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারেন।
৩. চায়ের দোকান:
চায়ের দোকান একটি সহজ এবং লাভজনক ব্যবসা। এটি সর্বদা প্রচলিত এবং সাধারণ মানুষের মাঝে জনপ্রিয়। রাস্তার পাশে ভালো লোকসংখ্যার মধ্যে দোকান খুললে প্রতিদিনের আয় বাড়াতে সাহায্য করবে।
৪. জুতার দোকান:
জুতা ব্যবসা একটি লাভজনক ক্ষেত্র। নতুন ডিজাইনের জুতা বাজারে আসলে তা দ্রুত বিক্রি হয়। আপনি স্থানীয় বাজারের ট্রেন্ড অনুযায়ী নতুন মডেল নিয়ে আসলে ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে পারবেন।
৫. বেকারির ব্যবসা:
বেকারির পণ্য সাধারণত প্রতিদিনের চাহিদা থাকে। পাউরুটি, বিস্কুট এবং অন্যান্য মিষ্টি খাবার বিক্রির মাধ্যমে আপনি সহজেই লাভবান হতে পারবেন। প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করলে পরবর্তীতে ব্যবসা বাড়ানো সম্ভব।
৬. কাঁচামালের ব্যবসা:
কাঁচামাল ব্যবসা এমন একটি ক্ষেত্র যা সবসময় সক্রিয়। সবজি, ফল ও অন্যান্য কাঁচামাল প্রতিদিনের জীবনের জন্য অপরিহার্য। সঠিক সরবরাহ এবং গুণগত মান নিশ্চিত করলে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
এই ব্যবসাগুলো ইসলামের বিধান অনুযায়ী হালাল এবং সমাজের জন্যও উপকারী। এগুলো শুরু করতে আপনার কিছু মূলধন ও সঠিক পরিকল্পনা দরকার। আল্লাহর সাহায্য ও দোয়ার মাধ্যমে আপনি অবশ্যই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
৪০ দিনে ধনী হওয়ার আমল
৪০ দিনে ধনী হওয়ার আমল সম্পর্কে আমরা এখন আলোচনা করব। ইসলামে ধনী হওয়ার জন্য বৈধ এবং হালাল উপায়ে দোয়া, ইবাদত এবং আমলকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, এটি মনে রাখতে হবে যে ধনী হওয়ার আসল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা এবং হালাল পথে সফলতা লাভ করা।
আমলটির পদ্ধতি:
- নামাজ:
- প্রতি দিন এশার নামাজ পড়ার পর এই আমলটি করতে হবে। নামাজ হচ্ছে আল্লাহর কাছে সরাসরি প্রার্থনা করার একটি মাধ্যম, যা আমাদের আত্মবিশ্বাস এবং আধ্যাত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে।
- ওজু:
- ওজু অবস্থায় থাকলে পবিত্রতা বজায় থাকে, যা আল্লাহর কাছে প্রার্থনার সময় বিশেষ বরকত এনে দেয়।
- কিবলামুখী হয়ে বসা:
- কিবলার দিকে মুখ করে বসা হলে আল্লাহর নৈকট্য অনুভব হয় এবং প্রার্থনা করার সময় মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
- দোয়া:
- "আসতাগফিরুল্লাহাল্লাযি লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম, বাদীউস সামওয়াতি ওয়াল আরদী মিন জামিয়ি হুরমি ওয়া জুলমি ওয়া এসরফি আ’লা নাফসি ওয়াআতুবু ইলাইহি" এই দোয়াটি ৪০০ বার পাঠ করতে হবে। এটি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা এবং ধন-সম্পদের জন্য বরকত চাওয়ার একটি মাধ্যম।
ফলাফল:
এভাবে ৪০ দিন এই আমলটি করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত পাওয়া যায়। নিয়মিত দোয়া ও আমল করার ফলে ধনী হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া, এটি আপনার আধ্যাত্মিক উন্নতিও সাধন করবে।
বিশেষ নির্দেশনা:
- নিয়মিত এবং মনোযোগ সহকারে এই আমল করা উচিত।
- অঙ্গীকার করতে হবে যে, আপনি হালাল পথে ধনী হতে চান এবং আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপন করবেন।
আল্লাহ আপনার চেষ্টা ও আমল কবুল করুন।
দ্রুত ধনী হওয়ার আমল
দ্রুত ধনী হওয়ার আমল সম্পর্কে এখন আলোচনা করব। আমরা ইতিমধ্যেই ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনেছি। দ্রুত ধনী হওয়ার জন্য ইসলামে বিভিন্ন আমল ও দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তিগফার) ধনী হওয়ার একটি শক্তিশালী উপায় হিসেবে গণ্য হয়। নিচে যে হাদিসটি উল্লেখ করা আছে, তা থেকে আপনারা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেন যে, ইস্তিগফার অর্থনৈতিক ও মানসিক সংকট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি মাধ্যম।
ইস্তিগফারের ফজিলত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার করবে, আল্লাহ তাকে সব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করবেন, তার রিজিকের দ্বার খুলে দেবেন এবং সংকট থেকে রক্ষা করবেন।" (আবু দাউদ)
এই হাদিস অনুযায়ী, ইস্তিগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) শুধু পাপমোচনই নয়, বরং রিজিক বৃদ্ধির মাধ্যমও। সুতরাং, যারা দ্রুত ধনী হতে চান, তাদের উচিত নিয়মিত ইস্তিগফার করা।
দ্রুত ধনী হওয়ার আমলগুলো:
১. ইস্তিগফার পড়া:
প্রতিদিন সকাল-বিকাল এবং নামাজের পর ১০০ বার করে "আস্তাগফিরুল্লাহ" পড়া উচিত। এটি আল্লাহর রহমত অর্জন এবং ধন-সম্পদ বৃদ্ধির একটি বিশেষ আমল।
২. দরুদ শরীফ পড়া:
ধনী হওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা উচিত। দরুদ শরীফ পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা রিজিকের দরজা খুলে দেন এবং দোয়া কবুল করেন।
৩. সুরা ওয়াকিয়া তিলাওয়াত করা:
হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি প্রতিদিন সুরা ওয়াকিয়া পড়বে, তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।" (ইবনে কাসির) সুতরাং প্রতিদিন ফজরের পর বা এশার পর এই সুরাটি পড়লে আল্লাহ রিজিকের বরকত দান করেন।
৪. রিযিক বৃদ্ধির দোয়া:
নিয়মিত রিজিক বৃদ্ধির জন্য দোয়া করা যেতে পারে: "আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিজকান ওয়াসি’আন ওয়া ইলমান নাফি’আন ওয়া আমালান মুতাক্বাব্বালান।" যার অর্থ: "হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রশস্ত রিজিক, উপকারী জ্ঞান, এবং গ্রহণযোগ্য আমল প্রার্থনা করছি।"
৫. আল্লাহর রাস্তায় দান করা:
দান করা ইসলামের একটি বড় আমল এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। দান করলে সম্পদ বাড়ে এবং বরকত আসে। আল্লাহ বলেন, "যা কিছু তোমরা ব্যয় করো, আল্লাহ তার প্রতিদান দেন।" (সূরা সাবা, ৩৯)
সারসংক্ষেপ:
দ্রুত ধনী হতে চাইলে ইস্তিগফার, দরুদ শরীফ, সুরা ওয়াকিয়া তিলাওয়াত, এবং রিজিক বৃদ্ধির দোয়া নিয়মিত করা অত্যন্ত উপকারী আমল। তবে, সবকিছুর পরেও ধৈর্য এবং আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) রাখা জরুরি। আল্লাহ তায়ালা সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে রিজিকের ব্যবস্থা করবেন।
আল্লাহ আপনাকে ধনী হওয়ার পথে সহায়তা করুন এবং আপনার জীবনে বরকত প্রদান করুন।
রাতারাতি ধনী হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়
রাতারাতি ধনী হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় সম্পর্কে এখন আলোচনা করব। রাতারাতি ধনী হওয়ার জন্য হালাল ব্যবসা শুরু করা একটি চমৎকার উপায়। আপনার উল্লেখিত ব্যবসাগুলো বিশেষত মুদিখানা, ফাস্টফুড, কফি হাউস, বাজার হোম ডেলিভারি, রেস্টুরেন্ট, এবং বইয়ের দোকান—সবগুলোই লাভজনক এবং দ্রুত আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা রাখে।
মুদিখানার দোকান: প্রতিদিনের চাহিদা মেটানোর জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য ব্যবসা। প্রতিদিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে দ্রুত আয় সম্ভব।
ফাস্টফুড ও কফি হাউস: দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য ফাস্টফুড এবং কফি ব্যবসা জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। যদি আপনি ব্যস্ত এলাকায় এই ধরনের ব্যবসা শুরু করেন, তাহলে দ্রুত গ্রাহক তৈরি করতে পারবেন।
বাজার হোম ডেলিভারি: মানুষের সময় বাঁচাতে বাজার সরাসরি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সুবিধা প্রদান করে সহজেই আয় বৃদ্ধি সম্ভব।
রেস্টুরেন্ট ব্যবসা: রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করলে, আপনি ভালো আয় করতে পারেন, বিশেষত যদি মানসম্মত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার সরবরাহ করতে পারেন।
বইয়ের দোকান: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে বইয়ের দোকান খোলা খুবই লাভজনক, বিশেষ করে পরীক্ষার মৌসুমে।
এই ব্যবসাগুলোর যেকোনো একটি হালালভাবে শুরু করে আপনি দ্রুত ধনী হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে পারেন, তবে ধৈর্য ও সঠিক পরিকল্পনা অপরিহার্য।
রাতারাতি ধনী হওয়ার দোয়া
রাতারাতি ধনী হওয়ার দোয়া এবং আল্লাহর কাছে রিজিক বৃদ্ধির জন্য যে আমলগুলো করা উচিত, তা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে যে আয়াতটি উল্লেখ করা আছে, সেটি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়াকে স্মরণ করায় এবং রিজিকের জন্য আমাদের ধৈর্য ধরার উপদেশ দেয়।
আরবিঃ ولا تمدن عينيك الى ما متعنا به ازوجا منهم زهرة الحيوة الدنيا لتفتنهم فيه ورزق ربك خير و ابقى امر اهلك بالله واصطبر عليها لا نسلك رزقا نحن نرزقك والعاقبة للتقوى
বাংলা উচ্চারণঃ ওয়ালা তামাদ্দূনী আ’ইনাইকা ইলা মা মুতাআ’ন্না বিহী আজওয়াজা মিনহুম জাহরাতাল হায়াতিদ দুনইয়া লা তাফতানিহিম ফিহী ওয়া রিজক্বু রাব্বিকা খাইরুওয়া আবক্বা আমারা আহলাকা বিল্লাহি ওয়াসতাবির আ’লাইহা লা নাসলাকা রিজক্বা নাহনু নারজুক্বুকা ওয়াল আ’ক্বিবাতু লিত্তাক্বওয়া।
দ্রুত ধনী হওয়ার জন্য কিছু বিশেষ আমল ও দোয়া:
- ইস্তিগফার পড়া:
- "أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ"
- অর্থ: “আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি সেই আল্লাহর কাছে, যিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, যিনি চিরঞ্জীব, যিনি সমস্ত কিছুর পরিচালনাকারী, এবং আমি তাঁর কাছেই ফিরে আসছি।”
- সুরা ওয়াকিয়া পড়া:
- রিজিকের বরকত ও আয় বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত সুরা ওয়াকিয়া পড়ার সুপারিশ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে সুরা ওয়াকিয়া পড়বে, সে কখনো দারিদ্র্যতার সম্মুখীন হবে না।
- দরুদ শরীফ পড়া:
- দরুদ শরীফ বেশি বেশি পড়ার মাধ্যমে রিজিকের দরজা খোলা যায়।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
ধৈর্য, নিয়মিত ইবাদত, এবং হালাল উপার্জনের জন্য চেষ্টা করাই রিজিকের বরকত পাওয়ার মূল চাবিকাঠি। আল্লাহ তাআলার উপর ভরসা রেখে, তিনি আমাদের সকলের রিজিকের ব্যবস্থা করবেন ইনশাআল্লাহ।
রিজিক বৃদ্ধি করার দোয়া
ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় অবলম্বন করে ধনী হওয়া উচিত প্রতিটি মুসলিমের। ইসলামে ধনী হওয়ার জন্য মূলনীতি হলো হালাল উপায়ে পরিশ্রম করা এবং আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা। প্রতিটি মুসলিমের রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন আল্লাহ তাআলা। তবে, রিজিকের বরকত বৃদ্ধি পেতে হলে আল্লাহর কাছে দোয়া করা, তাঁর পথ অনুসরণ করা এবং সঠিক নীতি-নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগফির লি জাম্বি ওয়া ওয়াসসি লি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফিমা রাজাকতানি।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন, আমার ঘর প্রশস্ত করে দিন এবং আপনি আমাকে যে জীবিকা দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন।
আল্লাহ তাআলা আমাদের রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন, কিন্তু আমরা তাঁর কাছে প্রার্থনা ও ইবাদতের মাধ্যমে আরও বেশি রিজিক ও বরকত পেতে পারি।
ঋণ পরিশোধের দোয়া
ঋণ পরিশোধের দোয়া চলুন জেনে নেওয়া যাক। ঋণ পরিশোধের জন্য দোয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে ঋণ নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে এবং তা পরিশোধ করার গুরুত্বও দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর কাছে দোয়া করা আমাদের জন্য আশীর্বাদ এবং সাহায্যের এক মাধ্যম।
ঋণ পরিশোধের জন্য একটি দোয়া:
আরবিঃ اللهم يا غنى يا حميد يامبدى يامعيد يارحيم ياكريم اكفنى بحلالك عن حرامك واغننى بفضلك عمن سواك
বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইয়া গানিয়্যু ইয়া হামীদূ ইয়া মুবদিউ ইয়া মুয়ীদূ ইয়া রাহিমু ইয়া কারিমুকফিনী বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়াগনিনী বিফাদ্বলিকা আম্মান সিওয়াকা।
অর্থ: "হে আল্লাহ, আমাকে তোমার হালাল দ্বারা হারাম থেকে রক্ষা করো এবং তোমার অনুগ্রহ দ্বারা আমার জন্য অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করো।"
অভাব দূর করার দোয়া ও আমল
অভাব দূর করার দোয়া ও আমল জানা থাকলে খুব সহজে আমরা আমাদের সংসার থেকে অভাব দূর করতে পারব। অভাব দূর করার জন্য ইসলামী দোয়া ও আমল সত্যিই কার্যকরী। আল্লাহ তাআলা আমাদের পরীক্ষা করার জন্য কখনও অভাব দেন, কিন্তু যদি আমরা তাঁর কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করি এবং কিছু বিশেষ আমল করি, তবে তিনি আমাদের অভাব দূর করবেন।
জোহর নামাজের পরে সূরা নুহ, আছর নামাজের পরে সূরা নাবা, মাগরীব নামাজের পরে সূরা ওয়াক্বিয়া, ও ইশার নামাজের পর সূরা মুলক নিয়মিত পাঠ করতে হবে তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালার রহমতে অভাব দূর হবে। প্রতিদিন ফজর নামাজের পরে নিজের আয়াতটি ৫০ বার পড়তে হবে তাহলে অভাব দূর করবে একমাত্র আল্লাহ তা'আলা।
আরবিঃ سلام قولامن رب رحيم
বাংলা উচ্চারণঃ সালামুন ক্বাওলাম্মির রাব্বির রাহিম।
লেখকের শেষ বক্তব্য
ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় অনেক গুলো আছে। ওপরের আলোচনায় আমরা বেশ কিছু উপায় উল্লেখ করেছি। আপনি যদি তাড়াতাড়ি ধনী হতে চান তাহলে অবশ্যই এই আমল গুলো করতে থাকুন। কারণ আমাদের একমাত্র ধনী করতে পারে আল্লাহু তায়ালা। আল্লাহ ছাড়া আমাদের ধনী করার মত এরকম পৃথিবীর অন্য কেউ নেই। তাই অল্প সময়ের মধ্যে ধনী হতে চাইলে উপরের আমলগুলো করুন।
আশা করি আপনারা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ধনী হওয়ার উপায় গুলো বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের ইসলামিক আর্টিকেল নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।
Comments
Post a Comment