পাইলস বা হেমোরয়েড হলো এমন একটি অবস্থান যেখানে মলদ্বারের রক্তনালী ফুলে যায় এবং মলদ্বার বা এর আশেপাশের এলাকায় গঠন সৃষ্টি হয়। এটি খুবই সাধারণ এবং প্রায় সবাই জীবনে একবার না একবার এর অভিজ্ঞতা পেতে পারেন।
পাইলস দুটি প্রকারের হয়ে থাকে:
ইন্টারনাল হেমোরয়েডস:
এগুলি মলদ্বারের অভ্যন্তরে ঘটে এবং সাধারণত চোখে দেখা যায় না।
এই ধরনের হেমোরয়েডস সাধারণত অস্বস্তি, রক্তপাত, এবং গরম অনুভূতি সৃষ্টি করে।
এক্সটারনাল হেমোরয়েডস:
এগুলি মলদ্বারের বাইরের অংশে ঘটে এবং সোজা দেখা যায়।
এই ধরনের হেমোরয়েডস সাধারণত ব্যথা, চুলকানি, এবং ফুলে যাওয়া সৃষ্টি করে।
হেমোরয়েডস এর কারণসমূহ:
দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা
অধিক চাপ দেওয়া সময় মলত্যাগের সময়
গর্ভাবস্থা
অপর্যাপ্ত ফাইবারযুক্ত খাদ্য গ্রহণ
চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনা:
উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা
শারীরিক ব্যায়াম করা
মলত্যাগের সময় বেশি চাপ না দেওয়া
পাইলস প্রতিরোধ করতে কোন খাবার খেতে হবে
পাইলস প্রতিরোধ করতে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন করতে পারেন যা আপনাকে সুস্থ রাখতে সহায়ক হবে। এখানে কিছু খাদ্য পরামর্শ দেওয়া হলো:
ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার:
ফলমূল: আপেল, কমলা, কলা, পেয়ারা
সবজি: ব্রকলি, গাজর, পালংশাক
শস্যদানা: ওটস, বাদামি চাল, সম্পূর্ণ গমের রুটি
প্রচুর পরিমাণে জল:
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা মল নরম রাখে এবং পাইলসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ডাল এবং শিম:
মুগ ডাল, মসুর ডাল, চনা, রাজমা, মটরশুঁটি
বাদাম এবং বীজ:
আখরোট, আলমন্ড, চিয়া বীজ
এলাহী লেগুমস (Legumes):
সয়াবিন, মটর
যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত:
অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার
খুব মসলাদার খাবার
অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল
পাইলস সমস্যা দূর করতে কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে
পাইলস সমস্যা দূর করতে কিছু নির্দিষ্ট খাবার এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলো আপনার মলদ্বারকে আরও চাপে ফেলতে পারে এবং পাইলসের লক্ষণকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এখানে কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো যা এড়িয়ে চলা উচিত:
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য:
স্ন্যাকস, ফাস্ট ফুড, এবং প্রস্তুত খাবার যা উচ্চ পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং শর্করা থাকে।
মসলাদার খাবার:
অতিরিক্ত মসলা বা ঝাল খাবার মলদ্বারের সমস্যা বাড়াতে পারে।
পাকা বা রিফাইন্ড শর্করা:
সাদা পাউরুটি, সাদা চিনি, কেক, কুকি ইত্যাদি।
চর্বিযুক্ত খাবার:
ফাস্ট ফুড, ফ্রাইড খাবার, এবং ভারী সসযুক্ত খাবার।
ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়:
অতিরিক্ত কফি, চা, এবং সোডা।
অ্যালকোহল:
অ্যালকোহল মলদ্বারের আর্দ্রতা কমাতে পারে এবং পাইলসের লক্ষণ বাড়াতে পারে।
দুধ এবং দুধজাত পণ্য:
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, দুধ এবং দুধজাত পণ্য (যেমন চীজ বা দই) পাইলসের লক্ষণ বাড়াতে পারে।
পাইলস বা হেমোরয়েড কি এবং কত প্রকার
পাইলস বা হেমোরয়েড হলো মলদ্বারের চারপাশে রক্তনালী ফুলে যাওয়ার একটি অবস্থা। এটি অত্যন্ত সাধারণ এবং সাধারণত অস্বস্তির কারণ হয়।
প্রকারভেদ:
ইন্টারনাল হেমোরয়েডস:
অবস্থান: মলদ্বারের অভ্যন্তরে।
লক্ষণ: সাধারণত ব্যথাহীন, তবে রক্তপাত হতে পারে যখন মলত্যাগ করা হয়। কখনো কখনো ফুলে যাওয়া অংশ বাইরে চলে আসতে পারে এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
এক্সটারনাল হেমোরয়েডস:
অবস্থান: মলদ্বারের বাইরের অংশে।
লক্ষণ: ব্যথা, চুলকানি, এবং ফুলে যাওয়া। এই ধরনের হেমোরয়েড সাধারণত মলদ্বারের চারপাশে মাংসপিণ্ডের মতো দেখা যায়।
কারণসমূহ:
দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা
অধিক চাপ দেওয়া সময় মলত্যাগের সময়
গর্ভাবস্থা
অপর্যাপ্ত ফাইবারযুক্ত খাদ্য
চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনা:
ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা
শারীরিক ব্যায়াম করা
মলত্যাগের সময় বেশি চাপ না দেওয়া
বয়স অনুযায়ী কতটুকু আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে তার তালিকা
বয়স অনুযায়ী দৈনিক কতটুকু ফাইবার (আঁশ) খাবার প্রয়োজন, তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, বিভিন্ন বয়সের জন্য ফাইবারের প্রস্তাবিত দৈনিক গ্রহণের পরিমাণ নিচে দেওয়া হলো:
১. শিশু (১-৩ বছর):
প্রস্তাবিত দৈনিক ফাইবার: ১৯ গ্রাম
২. শিশু (৪-৮ বছর):
প্রস্তাবিত দৈনিক ফাইবার: ২৫ গ্রাম
৩. কিশোর-কিশোরী (৯-১৩ বছর):
পুরুষ: ৩১ গ্রাম
মহিলা: ২৬ গ্রাম
৪. কিশোর-কিশোরী (১৪-১৮ বছর):
পুরুষ: ৩৮ গ্রাম
মহিলা: ২৬ গ্রাম
৫. প্রাপ্তবয়স্ক (১৯-৫০ বছর):
পুরুষ: ৩৮ গ্রাম
মহিলা: ২৫ গ্রাম
৬. প্রাপ্তবয়স্ক (৫০ বছরের বেশি):
পুরুষ: ৩০ গ্রাম
মহিলা: ২১ গ্রাম
এই পরিমাণ ফাইবার অন্তর্ভুক্ত করতে খাদ্যতালিকায় কিছু সাধারণ ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, যেমন:
ফলমূল: আপেল, পেয়ারা, বেরি
সবজি: পালংশাক, ব্রকলি, গাজর
শস্যদানা: ওটস, বাদামি চাল, সম্পূর্ণ গমের রুটি
ডাল: মসুর ডাল, চানা, মটরশুঁটি
বাদাম এবং বীজ: আখরোট, চিয়া বীজ
পাইলসের সমস্যায় কোন ঔষধ খাওয়া যাবেনা
পাইলসের সমস্যা থাকলে কিছু নির্দিষ্ট ঔষধ এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এগুলি আপনার অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য নাও করতে পারে বা পরিস্থিতি খারাপও করতে পারে। এখানে কিছু ঔষধের তালিকা দেওয়া হলো যা পাইলসের সমস্যায় এড়িয়ে চলা উচিত:
১. অ্যানালজেসিক ওষুধ (Painkillers):
যেমন: অ্যাসপিরিন বা অন্যান্য NSAIDs (Non-Steroidal Anti-Inflammatory Drugs)। এই ধরনের ঔষধ মলদ্বারের আঘাত বা ক্ষতকে আরও উত্তেজিত করতে পারে।
২. কষ্ঠবর্ধক ঔষধ (Constipation-Inducing Medications):
যেমন: কিছু অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট বা অ্যান্টিহিস্টামিন যা কষ্ঠবর্ধক হতে পারে। কষ্ঠ সৃষ্টি হলে পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে।
৩. স্টেরয়েডস:
দীর্ঘমেয়াদী স্টেরয়েড ব্যবহারে মলদ্বারের টিস্যুর নরম হয়ে যেতে পারে এবং পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে।
৪. কিছু শক্তিশালী ডায়রিয়া-নিবারক ঔষধ:
এগুলি মলদ্বারকে আরও উত্তেজিত করতে পারে এবং পাইলসের লক্ষণ বাড়াতে পারে।
৫. এন্টি-ডায়রিয়া ঔষধ:
পাইলসের সমস্যা থাকলে কখনো কখনো অতিরিক্ত ডায়রিয়া বা মলত্যাগের সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত এন্টি-ডায়রিয়া ঔষধ এড়িয়ে চলা ভাল।
পাইলসের ব্যথা দূর করার ঘরোয়া উপায়
পাইলসের ব্যথা কমাতে কিছু সহজ এবং কার্যকর ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা আপনি চেষ্টা করতে পারেন:
১. গরম পানি দিয়ে সিটজ বাথ:
পদ্ধতি: একটি বাথটাবে গরম পানি (প্রচুর গরম না, যাতে জ্বলন্ত অনুভূতি না হয়) নিয়ে তাতে বসুন। এটি মলদ্বারের অঞ্চলকে আরাম দেয় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
ফ্রিকোয়েন্সি: দিনে ২-৩ বার, বিশেষ করে মলত্যাগের পরে।
২. ঠান্ডা কমপ্রেস:
পদ্ধতি: একটি ঠান্ডা কমপ্রেস বা বরফের প্যাক কভারে প্যাঁচিয়ে ব্যথা বা ফুলে যাওয়া অংশে রাখুন। এটি শোথ কমাতে এবং ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।
ফ্রিকোয়েন্সি: দিনে ৩-৪ বার।
৩. ফাইবারযুক্ত খাবার:
পদ্ধতি: খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার অন্তর্ভুক্ত করুন যেমন ফলমূল, সবজি, এবং শস্যদানা। এটি মল নরম রাখতে সহায়ক এবং পাইলসের উপর চাপ কমায়।
৪. পর্যাপ্ত জলপান:
পদ্ধতি: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। এটি মল নরম রাখতে সাহায্য করে এবং কষ্ঠ কমায়।
৫. কাস্টর অয়েল:
পদ্ধতি: কিছু কাস্টর অয়েল মলদ্বারের চারপাশে লাগান। এটি ব্যথা এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৬. অ্যাপেল সিডার ভিনেগার:
পদ্ধতি: কিছু অ্যাপেল সিডার ভিনেগার তুলার সাহায্যে পাইলসের ওপর লাগান। এটি অ্যান্টিসেপ্টিক এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
৭. সিটজ বাথের মধ্যে ইপসম সল্ট:
পদ্ধতি: গরম পানিতে কিছু ইপসম সল্ট মিশিয়ে সিটজ বাথ নিন। এটি ব্যথা এবং শোথ কমাতে সাহায্য করে।
পাইলস রোগের অপারেশন সম্পর্কে জেনে নিন
পাইলসের চিকিৎসায় অপারেশন সাধারণত তখনই প্রস্তাবিত হয় যখন অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতি, যেমন ডায়েটের পরিবর্তন, ঘরোয়া চিকিৎসা এবং ঔষধি চিকিৎসা, যথেষ্ট কার্যকর না হয়। পাইলস অপারেশন বিভিন্ন পদ্ধতিতে করা যেতে পারে, যার মধ্যে কিছু সাধারণ পদ্ধতির বিবরণ নিচে দেওয়া হলো:
১. হেমোরয়েডেক্টমি:
পদ্ধতি: এটি পাইলস অপসারণের একটি সার্জিক্যাল পদ্ধতি। এটি সাধারণত স্থানীয় অ্যানেসথেসিয়া বা সাধারণ অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার করে করা হয়।
পদ্ধতি: অপারেশনের মাধ্যমে পাইলসের ফুলে যাওয়া রক্তনালী বা টিস্যু সরানো হয়। এরপর সেলাই করা হয়।
সুবিধা: এটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান প্রদান করতে পারে এবং গুরুতর পাইলসের ক্ষেত্রে কার্যকর।
২. স্টেপল রিসেকশন (Stapled Hemorrhoidopexy):
পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে পাইলসের মাংসপিণ্ডের অংশ অপসারণ করা হয় এবং মলদ্বারের অভ্যন্তরে ফুলে যাওয়া অংশকে মেরামত করা হয়।
পদ্ধতি: এটি স্টেপলার ডিভাইস ব্যবহার করে করা হয়, যা পাইলসের উপর একটি স্টেপল রাখে এবং অতিরিক্ত টিস্যু অপসারণ করে।
সুবিধা: সাধারণত কম ব্যথা এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়।
৩. লেজার সার্জারি:
পদ্ধতি: লেজার ব্যবহার করে পাইলসের টিস্যু অপসারণ করা হয়। এটি সাধারণত একটি আধুনিক এবং কম আক্রমণকারী পদ্ধতি।
সুবিধা: পদ্ধতি কম ব্যথাযুক্ত হতে পারে এবং পুনরুদ্ধার দ্রুত হতে পারে।
৪. আরআরটি (Rubber Band Ligation):
পদ্ধতি: এটি একটি অ-সার্জিক্যাল পদ্ধতি। পাইলসের ভিত্তিতে একটি ছোট রাবার ব্যান্ড লাগানো হয় যা রক্ত প্রবাহ বন্ধ করে দেয় এবং পাইলসের অংশ মরে গিয়ে পরে পতিত হয়।
সুবিধা: সাধারণত স্থানীয় অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে করা হয় এবং পদ্ধতিটি দ্রুত এবং কম আক্রমণকারী হয়।
অপারেশন পরবর্তী যত্ন:
ব্যথা ব্যবস্থাপনা: সাধারণত ব্যথা কমাতে ওষুধ দেওয়া হয়।
পুনরুদ্ধার: অপারেশনের পর সাধারণত কিছুদিন বিশ্রাম প্রয়োজন হয় এবং ব্যথা এবং অস্বস্তি হতে পারে।
মলত্যাগের জন্য সহায়তা: মল নরম রাখতে এবং চাপ কমাতে খাদ্যতালিকায় ফাইবার বৃদ্ধি করা হয়।
হেমোরয়েড বা পাইলসের ঝুঁকিতে করা বেশি থাকে
পাইলস বা হেমোরয়েডের ঝুঁকি বাড়তে পারে এমন কিছু সাধারণ কারণ এবং জীবনযাত্রার অভ্যাস রয়েছে যা আপনাকে সাবধান থাকতে সাহায্য করবে:
ঝুঁকি বাড়ানোর কারণসমূহ:
দীর্ঘ সময় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা:
দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা মলদ্বারে চাপ বাড়াতে পারে, যা পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়।
অপর্যাপ্ত ফাইবারযুক্ত খাদ্য:
ফাইবারের অভাব হলে মল কঠিন হয়ে যায় এবং মলত্যাগের সময় চাপ বাড়াতে পারে, যা পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়।
অনিয়মিত মলত্যাগ:
কষ্ঠ বা ডায়রিয়া সমস্যা থাকলে পাইলসের সমস্যা হতে পারে।
অতিরিক্ত চাপ দেওয়া:
মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দেওয়া পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়।
গর্ভাবস্থা:
গর্ভাবস্থায় বাড়ন্ত জরায়ু মলদ্বারের উপর চাপ বাড়াতে পারে, যা পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়।
বয়স:
বয়স বাড়ার সাথে সাথে মলদ্বারের টিস্যু দুর্বল হতে পারে এবং পাইলসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
অতিরিক্ত ওজন:
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা মলদ্বারে চাপ বাড়াতে পারে এবং পাইলসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বংশগত কারণ:
পরিবারের ইতিহাসে পাইলসের সমস্যা থাকলে আপনার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
অপর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ:
শারীরিক গতিবিধি কম হলে মলদ্বারের রক্তপ্রবাহে সমস্যা হতে পারে, যা পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়।
ঝুঁকি কমানোর উপায়:
ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য খাওয়া: ফলমূল, সবজি, শস্যদানা, এবং ডাল খান।
পর্যাপ্ত জলপান: প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।
নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ: দৈনিক ব্যায়াম করুন এবং দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে না থাকুন।
মলত্যাগের সময় চাপ কমানো: মলত্যাগের সময় চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখুন এবং স্থূলতা এড়িয়ে চলুন।
হেমোরয়েড বা পাইলস কত প্রকার ও কি কি ?
পাইলস বা হেমোরয়েড দুটি প্রধান প্রকারের হয়ে থাকে, যা তাদের অবস্থান এবং লক্ষণের ভিত্তিতে বিভক্ত করা যায়:
১. ইন্টারনাল হেমোরয়েডস (Internal Hemorrhoids):
অবস্থান: মলদ্বারের অভ্যন্তরে, মিউকাস মেমব্রেনের নিচে।
লক্ষণ:
সাধারণত ব্যথা অনুভূত হয় না।
মলত্যাগের সময় রক্তপাত হতে পারে।
কখনো কখনো ফ্ল্যাপ বা ফুলে যাওয়া অংশ মলদ্বারের বাইরের দিকে বের হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে (এরূপ অবস্থাকে 'প্রোলাপ্সড হেমোরয়েড' বলা হয়)।
২. এক্সটারনাল হেমোরয়েডস (External Hemorrhoids):
অবস্থান: মলদ্বারের বাইরের অংশে, ত্বকের নিচে।
লক্ষণ:
ব্যথা, চুলকানি, এবং ফুলে যাওয়া সাধারণ।
মলদ্বারের চারপাশে একটি গাঁটের মতো অনুভূতি হতে পারে।
কাঁপুন বা ব্যথার অনুভূতি সাধারণত বেশি হয়, বিশেষ করে যখন বসা বা দাঁড়ানো হয়।
অতিরিক্ত প্রকারভেদ:
প্রোলাপ্সড হেমোরয়েডস:
এটি এমন এক্সটারনাল হেমোরয়েডস যা মলদ্বারের ভিতরে থেকে বাইরে চলে আসে এবং পাইলসের আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বের হয়ে আসে।
থ্রম্বোটিক হেমোরয়েডস:
এটি এমন এক্সটারনাল হেমোরয়েড যা রক্ত জমে গিয়ে থ্রম্বোসিস বা গাঁটে পরিণত হয়। এটি অত্যন্ত ব্যথাদায়ক হতে পারে এবং সাধারণত একটি নীলাভ বা কালো গাঁটের মতো দেখা যায়।
সিক্রেটরি হেমোরয়েডস:
এটি বেশিরভাগ সময় অসংলগ্ন ভাবে দেখা যায় এবং এটি সাধারণত মলদ্বারের অভ্যন্তরে সিক্রেটরি (প্রস্রাব) কার্যকলাপের জন্য থাকে।
হেমোরয়েডের প্রাথমিক লক্ষণসমূহ:
মলত্যাগের সময় রক্তপাত
মলদ্বারের চারপাশে ব্যথা বা অস্বস্তি
চুলকানি বা জ্বালা
ফুলে যাওয়া অংশ দেখা যেতে পারে
শেষ কথা
পাইলস বা হেমোরয়েড একটি সাধারণ কিন্তু কখনও কখনও অস্বস্তিকর সমস্যা হতে পারে। এর সঠিক চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত জলপান, এবং নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ আপনাকে পাইলস প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।
Comments
Post a Comment