ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড কেন হয়
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড বা সীমাবদ্ধ হওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। সাধারণত, ফেসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘন করলে আইডি রেস্ট্রিক্টেড হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি প্রধান কারণ হলো:
কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘন: ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড বা নীতিমালা লঙ্ঘন করলে ফেসবুক আপনার আইডি সীমাবদ্ধ করতে পারে। যেমন:
আপত্তিকর বা ক্ষতিকারক কনটেন্ট শেয়ার করা।
বিদ্বেষমূলক মন্তব্য, হুমকি বা অপমানজনক আচরণ।
যৌনতা, সহিংসতা বা আপত্তিকর কনটেন্ট শেয়ার করা।
ভুয়া প্রোফাইল বা সত্তা: যদি ফেসবুক মনে করে যে আপনি একটি ভুয়া প্রোফাইল তৈরি করেছেন বা কারও পরিচয় জালিয়াতি করছেন, তাহলে আপনার আইডি রেস্ট্রিক্ট করা হতে পারে।
অস্বাভাবিক কার্যকলাপ: ফেসবুক আইডিতে হ্যাকিংয়ের চেষ্টা বা অস্বাভাবিক কার্যকলাপ (যেমন, অস্বাভাবিকভাবে অনেক বার লগইন করার চেষ্টা) দেখা দিলে ফেসবুক আইডি সীমাবদ্ধ করতে পারে।
স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম: কখনও ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম কোনও অসঙ্গতি সনাক্ত করলে, যেমন স্প্যামিং বা সন্দেহজনক কার্যকলাপ, আইডি রেস্ট্রিক্ট করা হতে পারে।
নিষিদ্ধ বিষয়বস্তু প্রচার: অবৈধ পণ্য বা সেবা প্রচার করলে, যেমন মাদক, অস্ত্র, বা জুয়া সম্পর্কিত কোনও পোস্ট বা বিজ্ঞাপন করলে, আইডি নিষিদ্ধ বা রেস্ট্রিক্ট হতে পারে।
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড অর্থ কি ?
ফেসবুক আইডি "রেস্ট্রিক্টেড" অর্থ হলো আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের উপর কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। এই সীমাবদ্ধতার ফলে আপনি কিছু নির্দিষ্ট কার্যকলাপ করতে পারবেন না বা আপনার অ্যাকাউন্ট পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবেন না। এটি আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হওয়ার চেয়ে কম গুরুতর, তবে এতে আপনাকে কিছু কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে।
"রেস্ট্রিক্টেড" অবস্থায় যা হতে পারে:
পোস্ট করা বা মন্তব্য করা বন্ধ: আপনি নতুন পোস্ট করতে বা কারও পোস্টে মন্তব্য করতে পারবেন না।
মেসেঞ্জার সীমাবদ্ধতা: মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠাতে সমস্যা হতে পারে, বা আপনি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মেসেজ করতে পারবেন না।
বন্ধু অনুরোধ পাঠানো: নতুন বন্ধু অনুরোধ পাঠাতে সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে।
গ্রুপ বা পেজ ম্যানেজমেন্ট: আপনি যদি কোনও পেজ বা গ্রুপ পরিচালনা করেন, তাহলে সেই কার্যকলাপেও সীমাবদ্ধতা আসতে পারে।
লাইক বা রিয়্যাক্ট দেওয়া বন্ধ: পোস্টে লাইক বা অন্য কোনো রিয়্যাকশন দিতে অক্ষম হতে পারেন।
নিষিদ্ধ কন্টেন্ট দেখা বা শেয়ার করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ: আপনার শেয়ার করা বা দেখা কনটেন্টও সীমিত করা হতে পারে।
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড তুলে নেওয়ার উপায়
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে সেটি তুলে নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। ফেসবুকের নিয়ম মেনে আইডির সীমাবদ্ধতা অপসারণের চেষ্টা করতে পারেন। এখানে রেস্ট্রিক্টেড তুলে নেওয়ার কয়েকটি উপায় দেওয়া হলো:
১. ফেসবুকের দেওয়া নির্দেশিকা অনুসরণ করুন
ফেসবুক সাধারণত নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানায় কেন আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড হয়েছে। নোটিফিকেশনে রেস্ট্রিক্টেড অপসারণের জন্য কী করতে হবে তা উল্লেখ থাকতে পারে।
আপনি সেই নির্দেশিকা অনুসরণ করে সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
২. আপিল করা
যদি আপনি মনে করেন যে আপনার আইডি অন্যায়ভাবে রেস্ট্রিক্টেড হয়েছে, তাহলে ফেসবুকে আপিল করতে পারেন।
সাধারণত ফেসবুক একটি লিঙ্ক দেয় যার মাধ্যমে আপনি আপিল করতে পারবেন। আপনি এই লিঙ্কটি খুঁজে পাবেন ফেসবুক নোটিফিকেশনে বা ফেসবুকের Help Center-এ।
আপিল করার জন্য:
ফেসবুকের Help Center-এ যান এবং সেখানে আপিল ফর্ম পূরণ করুন।
যে বিষয়বস্তু বা কার্যক্রমের জন্য রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়েছে তার জন্য ব্যাখ্যা দিন।
৩. ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড পর্যালোচনা করুন
ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লঙ্ঘনের জন্য রেস্ট্রিকশন দেওয়া হয়। ফেসবুকের নীতিমালা ভালোভাবে বুঝে ভবিষ্যতে এমন আচরণ থেকে বিরত থাকুন।
রেস্ট্রিকশনের মেয়াদ শেষ হলে বা আপিল গ্রহণ করা হলে আপনার আইডি পুনরায় স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
৪. পরিচয় যাচাইকরণ
কখনও কখনও ফেসবুক রেস্ট্রিকশন তোলার আগে আপনার পরিচয় যাচাই করতে বলতে পারে। এর জন্য ফেসবুককে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্যান্য ডকুমেন্ট পাঠাতে হতে পারে।
ফেসবুকের নির্দেশনা অনুযায়ী আইডি ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
৫. সময় পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা
অনেক সময় রেস্ট্রিকশন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেওয়া হয়। যেমন ২৪ ঘণ্টা, ৭ দিন বা আরও বেশি সময়। এই ক্ষেত্রে আপনাকে শুধু অপেক্ষা করতে হবে।
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড আপীল
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হলে আপিল করার মাধ্যমে আপনি ফেসবুকের কাছে পুনরায় পর্যালোচনার অনুরোধ করতে পারেন। যদি আপনি মনে করেন আপনার আইডি অন্যায়ভাবে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, তবে ফেসবুকে আপিল করার প্রক্রিয়াটি নিচে দেওয়া হলো:
১. ফেসবুক নোটিফিকেশন চেক করুন
যখন আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড করা হয়, ফেসবুক সাধারণত একটি নোটিফিকেশন পাঠায় বা অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করলে একটি বার্তা দেখায়। এখানে কারণ উল্লেখ থাকে কেন আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড হয়েছে এবং সেখানে একটি অপশন থাকবে "আপিল" করার জন্য।
নোটিফিকেশন থেকে আপিলের লিঙ্ক অনুসরণ করতে পারেন।
২. ফেসবুকের সাহায্য কেন্দ্র (Help Center) থেকে আপিল করুন
ফেসবুকের Help Center-এ যান: ফেসবুক সাহায্য কেন্দ্র.
এখানে আপনার অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সমস্যার জন্য সঠিক বিভাগ খুঁজে বের করুন। সাধারণত এখানে "Account Disabled" বা "Restricted" সংক্রান্ত অপশন পাওয়া যায়।
রেস্ট্রিকশন তুলে নেওয়ার জন্য একটি ফর্ম পাওয়া যাবে। সেখানে আপনার নাম, ইমেইল ঠিকানা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করুন।
৩. আপনার আইডি যাচাইকরণ (যদি প্রয়োজন হয়)
ফেসবুক অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার পরিচয় যাচাই করার জন্য একটি ফর্ম পাঠাতে বলবে। এই প্রক্রিয়ায় আপনাকে পরিচয়পত্র (যেমন, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট) আপলোড করতে হতে পারে।
আপনার দেওয়া তথ্য সঠিক হলে এবং ফেসবুকের নীতিমালা মেনে চললে রেস্ট্রিকশন অপসারণের সম্ভাবনা থাকে।
৪. ফেসবুকের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করুন
ফর্ম জমা দেওয়ার পর, ফেসবুক সাধারণত কয়েকদিন সময় নেয় আপনার আপিল পর্যালোচনা করতে। তারা আপিল গ্রহণ করলে আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে রেস্ট্রিকশন তুলে নেওয়া হবে।
৫. ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ (যদি প্রয়োজন হয়)
যদি দীর্ঘ সময় পরেও কোনও উত্তর না পান, তাহলে ফেসবুকের সাথে সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করতে পারেন। ফেসবুকের যোগাযোগ ফর্ম বা ফেসবুক পেজে সহায়তা চেয়ে মেসেজ দিতে পারেন।
Your account is restricted For 2 days এর বাংলা কি ?
আপনার অ্যাকাউন্ট ২ দিনের জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।"
কত দিনের জন্য ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড করা যাই?
ফেসবুক বিভিন্ন মেয়াদের জন্য আইডি রেস্ট্রিক্টেড করতে পারে, যা সাধারণত আপনার কার্যকলাপের গুরুতরতার ওপর নির্ভর করে। এখানে কিছু সাধারণ মেয়াদ উল্লেখ করা হলো:
২৪ ঘণ্টা: কম গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য।
৩ দিন: একটু বেশি গুরুতর লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে।
৭ দিন: পুনরাবৃত্তি লঙ্ঘন বা গুরুতর নিয়ম ভঙ্গের জন্য।
৩০ দিন: অনেক গুরুতর নীতিমালা লঙ্ঘন করলে।
অনির্দিষ্ট বা স্থায়ী রেস্ট্রিকশন: যদি ফেসবুকের নীতিমালা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘিত হয় বা প্রোফাইল জাল বলে সন্দেহ করা হয়, তবে স্থায়ীভাবে রেস্ট্রিক্টেড করা হতে পারে।
ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে করণীয় ?
ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার না হয়। নিচে ফেসবুক আইডি হ্যাক হলে করণীয় পদক্ষেপগুলো দেওয়া হলো:
১. পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন
যদি আপনার অ্যাকাউন্টে এখনও প্রবেশ করতে পারেন, তবে দ্রুত আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
ফেসবুকের Settings > Security and Login > Change Password এ গিয়ে নতুন শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সেট করুন।
একটি জটিল পাসওয়ার্ড বেছে নিন, যা অন্য কারও পক্ষে অনুমান করা কঠিন।
২. হ্যাকারের লগইন বন্ধ করুন
Settings > Security and Login > Where You're Logged In-এ যান এবং দেখুন কোথা থেকে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করা হয়েছে।
সন্দেহজনক ডিভাইস বা স্থান থেকে লগইন দেখতে পেলে, Log Out করুন।
৩. ফেসবুকের মাধ্যমে রিপোর্ট করুন
ফেসবুকের Help Center-এ যান এবং Hacked Account সংক্রান্ত অপশনটি বেছে নিন।
এই লিঙ্ক ব্যবহার করে সরাসরি রিপোর্ট করতে পারেন: https://www.facebook.com/hacked
ফেসবুক আপনাকে বিভিন্ন নির্দেশনা দেবে আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করতে।
৪. পাসওয়ার্ড রিসেট লিঙ্ক ব্যবহার করুন
যদি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে না পারেন, তবে ফেসবুকের লগইন পেজে Forgotten password? অপশনটি ব্যবহার করুন।
আপনার ইমেইল বা ফোন নম্বর দিয়ে পাসওয়ার্ড রিসেট করার জন্য লিঙ্ক পাঠানোর অনুরোধ করতে পারেন।
৫. Two-Factor Authentication (2FA) চালু করুন
যখন আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন, তখন নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে Two-Factor Authentication (2FA) চালু করুন।
Settings > Security and Login > Use two-factor authentication-এ গিয়ে আপনার ফোন নম্বর বা অ্যাপ দিয়ে এটি চালু করতে পারেন।
এতে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করার জন্য শুধু পাসওয়ার্ড নয়, আরও একটি যাচাইকরণ ধাপ লাগবে।
৬. আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে লিঙ্ক করা ইমেইল এবং ফোন নম্বর চেক করুন
Settings > Contact Information-এ গিয়ে নিশ্চিত করুন যে আপনার ইমেইল এবং ফোন নম্বর সঠিক আছে।
যদি কোনও অপরিচিত ইমেইল বা নম্বর যুক্ত থাকে, তাহলে তা দ্রুত মুছে ফেলুন।
৭. ফেসবুকের বন্ধুরা বা পরিচিতদের জানিয়ে দিন
আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে, আপনার বন্ধু বা পরিচিতদের সতর্ক করুন যেন তারা কোনও সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক না করে বা হ্যাকারদের পাঠানো বার্তায় সাড়া না দেয়।
৮. ফেসবুকের নিরাপত্তা চেক-আপ ব্যবহার করুন
ফেসবুকের নিরাপত্তা চেক-আপ টুল ব্যবহার করে আপনার অ্যাকাউন্ট নিরাপদ করার আরও পরামর্শ পেতে পারেন। এটি আপনাকে আরও নিরাপত্তা সেটিংসের মাধ্যমে গাইড করবে।
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হওয়া থেকে বাঁচার উপায় ?
ফেসবুক আইডি রেস্ট্রিক্টেড হওয়া থেকে বাঁচার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম এবং সতর্কতা মেনে চলা দরকার। নিচে কিছু পদক্ষেপ দেওয়া হলো, যেগুলো অনুসরণ করলে আপনি ফেসবুকের রেস্ট্রিকশন এড়াতে পারবেন:
১. ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলুন
ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড নিয়মগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং সেগুলো অনুসরণ করুন।
ফেসবুকে কোনো ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, সহিংসতা, আপত্তিকর কনটেন্ট, বা অশ্লীল ছবি শেয়ার করবেন না।
ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কে জানতে এই লিঙ্ক ব্যবহার করতে পারেন: ফেসবুক কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড.
২. ভুয়া বা মিথ্যা তথ্য প্রচার করবেন না
মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য শেয়ার করবেন না। বিশেষ করে রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভুল তথ্য প্রচার করলে আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড হতে পারে।
৩. অস্বাভাবিক কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন
হঠাৎ অনেক বেশি বন্ধু অনুরোধ পাঠানো, একই কনটেন্ট বারবার পোস্ট করা, বা অস্বাভাবিকভাবে কোনও পোস্টে লাইক বা রিয়্যাক্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
এসব অস্বাভাবিক কার্যকলাপ ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমে স্প্যাম হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।
৪. অপরিচিত লিঙ্কে ক্লিক বা শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন
সন্দেহজনক বা অপরিচিত লিঙ্কে ক্লিক করবেন না এবং সেগুলো শেয়ারও করবেন না, কারণ এসব লিঙ্কে ক্ষতিকারক কনটেন্ট থাকতে পারে।
এসব লিঙ্ক শেয়ার করলে আপনার আইডি রেস্ট্রিক্টেড বা হ্যাক হতে পারে।
৫. Two-Factor Authentication (2FA) ব্যবহার করুন
আপনার অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে Two-Factor Authentication (2FA) চালু করুন। এতে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করার জন্য শুধু পাসওয়ার্ড নয়, আরও একটি যাচাইকরণ ধাপ লাগবে।
Settings > Security and Login > Use two-factor authentication থেকে এটি চালু করতে পারেন।
৬. ফেসবুকের সাথে আপনার আসল পরিচয় ব্যবহার করুন
ভুয়া প্রোফাইল বা অন্যের পরিচয় ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। ফেসবুকে আপনার আসল নাম, ছবি এবং সঠিক তথ্য ব্যবহার করুন।
প্রোফাইল ভেরিফিকেশন বা আইডি যাচাইকরণে সঠিক তথ্য ব্যবহার করলে আপনার অ্যাকাউন্ট নিরাপদ থাকবে।
৭. আপত্তিকর বা অনৈতিক পোস্ট রিপোর্ট করুন
কোনো আপত্তিকর কনটেন্ট দেখলে নিজে জড়িয়ে না পড়ে ফেসবুকে সেই কনটেন্ট রিপোর্ট করুন। এতে আপনি নিরাপদ থাকবেন এবং অন্য ব্যবহারকারীর দোষের কারণে আপনার অ্যাকাউন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
৮. ফেসবুক বিজ্ঞাপন নীতিমালা অনুসরণ করুন
যদি আপনি ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেন, তাহলে ফেসবুকের বিজ্ঞাপন নীতিমালা মেনে চলুন। ভুল তথ্য বা নিষিদ্ধ পণ্যের বিজ্ঞাপন দিলে আপনার অ্যাকাউন্ট রেস্ট্রিক্টেড হতে পারে।
৯. ফেসবুক অ্যাক্টিভিটি মনিটর করুন
আপনার অ্যাকাউন্টের কার্যকলাপ মনিটর করতে Security and Login অপশনে যান এবং নিয়মিত চেক করুন কোন ডিভাইস থেকে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
সন্দেহজনক কিছু দেখলে সাথে সাথে সেই ডিভাইস থেকে Log Out করে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।
১০. ফেসবুকের গাইডলাইনগুলো অনুসরণ করুন
নতুন নিয়ম বা আপডেট গাইডলাইন সম্পর্কে ফেসবুক নিয়মিত আপডেট দেয়। এগুলো অনুসরণ করলে রেস্ট্রিকশন এড়ানো সহজ হবে।
মেসেঞ্জার রেস্ট্রিক্টেড করলে কি হয় ?
মেসেঞ্জার রেস্ট্রিক্টেড করলে কয়েকটি নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা আরোপিত হয়, যার ফলে আপনি কিছু কার্যক্রম করতে পারবেন না। মেসেঞ্জার রেস্ট্রিক্ট করার মাধ্যমে আপনি যে ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগে সীমাবদ্ধতা আরোপ করছেন, সেই ব্যক্তি আপনার প্রোফাইল বা কার্যক্রমে সীমিতভাবে অংশ নিতে পারবে।
মেসেঞ্জার রেস্ট্রিক্ট করলে যা হয়:
১. মেসেজ দেখা যায়, কিন্তু উত্তর দেওয়া যায় না
রেস্ট্রিক্ট করা ব্যক্তির পাঠানো মেসেজ আপনার ইনবক্সে প্রদর্শিত হবে না; এটি Message Requests বা আলাদা কোনো ফোল্ডারে চলে যাবে।
আপনি চাইলেও মেসেজ দেখতে পারেন, কিন্তু মেসেজটি "seen" বা দেখা হয়েছে এমনটি দেখাবে না।
২. নোটিফিকেশন বন্ধ থাকবে
রেস্ট্রিক্ট করা ব্যক্তির কাছ থেকে নতুন মেসেজ আসলে আপনি কোনও নোটিফিকেশন পাবেন না।
৩. আপনি আর তারা একে অপরের অনলাইনের অবস্থা দেখতে পাবেন না
রেস্ট্রিক্ট করার পর, সেই ব্যক্তি আর আপনার অনলাইন স্ট্যাটাস (active status) দেখতে পাবে না এবং আপনিও তার অনলাইন অবস্থার সম্পর্কে জানতে পারবেন না।
৪. গ্রুপ চ্যাটে কোনও প্রভাব নেই
আপনি যদি একই গ্রুপে থাকেন, তাহলে সেখানে রেস্ট্রিক্ট করা ব্যক্তি আপনার মেসেজ দেখতে পারবে এবং আপনি তার মেসেজ দেখতে পারবেন। তবে ব্যক্তিগত চ্যাটে মেসেজিং সীমাবদ্ধ থাকবে।
৫. মেসেঞ্জারে কল করা যাবে না
রেস্ট্রিক্ট করা হলে সেই ব্যক্তি আপনাকে মেসেঞ্জারে কল করতে পারবে না এবং আপনিও তাকে কল করতে পারবেন না।
৬. রেস্ট্রিকশন গোপনে থাকে
রেস্ট্রিক্ট করা ব্যক্তির কাছে কোনও নোটিফিকেশন যাবে না, তাই সে বুঝতে পারবে না যে তাকে রেস্ট্রিক্ট করা হয়েছে। তবে সে আপনার সাথে আগের মতো যোগাযোগ করতে না পারলে সন্দেহ করতে পারে।
৭. রেস্ট্রিকশন তুলে নেওয়া
আপনি চাইলে রেস্ট্রিকশন তুলে নিতে পারেন। এজন্য মেসেঞ্জারের সেটিংসে গিয়ে Restrict অপশন থেকে সেই ব্যক্তির রেস্ট্রিকশন অপসারণ করতে পারবেন।
শেষ কথা
নিজের এবং অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন: অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যেমন ফেসবুক বা মেসেঞ্জার ব্যবহার করেন, তেমন জায়গায় সবসময় সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখুন।
নিরাপত্তা বজায় রাখুন: আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখুন এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা কনটেন্ট থেকে দূরে থাকুন।
ফেসবুকের নিয়ম মেনে চলুন: ফেসবুকের নীতিমালা ও গাইডলাইন মেনে চলা আপনার অ্যাকাউন্টকে রেস্ট্রিক্টেড হওয়া থেকে রক্ষা করবে এবং অনলাইনে নিরাপদ রাখবে।
Comments
Post a Comment