শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস কোনগুলো
শবে কদর (লাইলাতুল কদর) সম্পর্কে বহু হাদিস রয়েছে, যা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত হিসেবে বর্ণিত। কিছু উল্লেখযোগ্য হাদিস নিচে দেওয়া হলো:
১. লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: "লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৩)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি সওয়াব অর্জন করে।
২. লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অনুসন্ধান
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
এই হাদিস থেকে জানা যায়, শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটিতে সংঘটিত হয়।
৩. শবে কদরের দোয়া
হজরত আয়েশা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, লাইলাতুল কদরে কোন দোয়া পড়া উচিত?
তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেছিলেন:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি।"
অর্থাৎ, "হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল, আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।"
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
৪. শবে কদরের গুরুত্ব
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
শবে কদর হাদিসের আলোকে ফজিলত
শবে কদর বা লাইলাতুল কদর ইসলামের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বরকতময় একটি রাত। হাদিস ও কুরআনের আলোকে শবে কদরের বিভিন্ন ফজিলত নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১. হাজার মাসের ইবাদতের সমান সওয়াব
শবে কদরকে আল্লাহ তায়ালা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রাত হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
"লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৩)
এই আয়াত ও হাদিস অনুযায়ী, এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের (প্রায় ৮৩ বছরের) ইবাদতের সমান সওয়াব পাওয়া যায়।
২. গুনাহ মাফের সুযোগ
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, শবে কদরের রাতে ইবাদত করলে আল্লাহ তায়ালা মানুষের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
৩. দোয়া কবুলের রাত
শবে কদর দোয়া কবুলের রাত হিসেবে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) হজরত আয়েশা (রা.)-কে শিখিয়েছিলেন, শবে কদরে দোয়া করতে:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি"
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।"
এই দোয়াটি পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা বান্দার গুনাহ মাফ করেন।
৪. মালায়েকা ও রুহের অবতরণ
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
"তাতে ফেরেশতারা এবং রুহ অবতরণ করেন, তাদের রবের অনুমতিক্রমে, সব ধরনের আদেশ নিয়ে। শান্তি, যা ফজর পর্যন্ত বিরাজমান।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৪-৫)
এই আয়াত অনুযায়ী, শবে কদরের রাতে ফেরেশতারা এবং রুহুল কুদস (জিবরাইল আ.) পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং আল্লাহর আদেশ নিয়ে মানুষের জন্য রহমত ও শান্তি নিয়ে আসেন।
৫. ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব
রাসূলুল্লাহ (সা.) শবে কদরের রাতে ইবাদত করার বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
এই হাদিসে ইবাদতের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে এবং রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদরকে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।
শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস
শবে কদর (লাইলাতুল কদর) সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হলো যা এর ফজিলত এবং গুরুত্ব প্রকাশ করে:
১. লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৩)
এই হাদিস এবং কুরআনের আয়াত থেকে বোঝা যায়, শবে কদরের একটি রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি সওয়াব প্রদান করে।
২. গুনাহ মাফের সুযোগ
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
এই হাদিসে বলা হয়েছে, শবে কদরে ইবাদত করলে আল্লাহ বান্দার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
৩. লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটিতে হয়ে থাকে। হাদিসে এই রাতগুলোতে বেশি ইবাদতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪. লাইলাতুল কদরের দোয়া
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত:
তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, লাইলাতুল কদরে আমি কোন দোয়া পড়ব?
রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি"
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।"
৫. শান্তি ও রহমতের রাত
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
"তাতে ফেরেশতারা এবং রুহ অবতরণ করেন, তাদের রবের অনুমতিক্রমে, সব ধরনের আদেশ নিয়ে। শান্তি, যা ফজর পর্যন্ত বিরাজমান।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৪-৫)
এই আয়াতে শবে কদরের গুরুত্ব প্রকাশ করা হয়েছে যে, এই রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং ফজর পর্যন্ত শান্তি বিরাজ করে।
শবে কদর বলতে হাদিসে কোন রাতে নির্ধারণ করা হয়েছে
শবে কদরের সুনির্দিষ্ট রাতটি হাদিসে নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি, তবে রাসূলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন হাদিসে এই রাতকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। নিচে এ সংক্রান্ত কিছু হাদিস উল্লেখ করা হলো:
১. রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
বেজোড় রাত বলতে ২১, ২৩, ২৫, ২৭ এবং ২৯তম রাতগুলোকে বোঝানো হয়েছে। শবে কদর এই রাতগুলোর মধ্যে একটিতে হয়ে থাকে।
২. ২৭তম রাতের সম্ভাবনা
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর একজন সাহাবি হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বর্ণনা করেন:
"আল্লাহর কসম! আমি জানি, সেই রাতটি কোনটি, এবং সেটি ২৭তম রাত।"
(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭৬২)
যদিও কিছু সাহাবি ও ইসলামি স্কলাররা মনে করেন, শবে কদর ২৭তম রাত হতে পারে, তবে নিশ্চিতভাবে কোনো নির্দিষ্ট রাতের কথা বলা হয়নি।
৩. নির্দিষ্ট রাত না জানার হিকমত
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) শবে কদর সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা কোনো কারণে তা নির্দিষ্টভাবে জানাতে চাননি।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
"আমি বের হয়ে আসছিলাম শবে কদর সম্পর্কে তোমাদের জানানোর জন্য, কিন্তু দুই ব্যক্তির মাঝে বিবাদের কারণে তা আমাকে ভুলিয়ে দেওয়া হলো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৯)
এটি একটি প্রজ্ঞা, যাতে মুসলমানরা রমজানের শেষ দশকে বেশি ইবাদত করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারে।
শবে কদরের মর্যাদা হাদিসে দৃষ্টিতে কতটুকু
শবে কদরের মর্যাদা হাদিসে অত্যন্ত উচ্চভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই রাতের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে হাদিসে উল্লেখযোগ্য কিছু পয়েন্ট নিম্নরূপ:
১. হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রাত
"লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৩)
এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শবে কদরের রাত হাজার মাসের (প্রায় ৮৩ বছরের) চেয়েও শ্রেষ্ঠ।
২. গুনাহ মাফের সুযোগ
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
এই হাদিসে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, শবে কদরে ইবাদত করলে আল্লাহ বান্দার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেন।
৩. শান্তি ও রহমতের রাত
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
"তাতে ফেরেশতারা এবং রুহ অবতরণ করেন, তাদের রবের অনুমতিক্রমে, সব ধরনের আদেশ নিয়ে। শান্তি, যা ফজর পর্যন্ত বিরাজমান।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৪-৫)
এই আয়াত অনুযায়ী, শবে কদরের রাতে ফেরেশতারা পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং এই রাতের পুরো সময় শান্তি ও রহমতের মধ্যে থাকে।
৪. রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে অনুসন্ধান
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে হয়ে থাকে বলে উল্লেখিত হয়েছে, যা এ রাতের গুরুত্বকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
৫. দোয়া ও ইবাদতের মর্যাদা
হজরত আয়েশা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, শবে কদরে কোন দোয়া পড়া উচিত?
রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেছিলেন:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি"
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।"
এই দোয়া শবে কদরের রাতে পড়া উচিত, যা আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ বলে বিবেচিত।
শবে কদর নিয়ে হাদিস শরীফে রাসূলের বাণী
শবে কদর (লাইলাতুল কদর) নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বাণী হাদিস শরীফে উল্লেখিত রয়েছে। নিম্নে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস উল্লেখ করা হলো:
১. লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ
"লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৩)
রাসূলুল্লাহ (সা.) এই আয়াতের মাধ্যমে শবে কদরের রাতের অসীম ফজিলত প্রকাশ করেছেন।
২. শবে কদর সন্ধান করা
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
রাসূলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে শবে কদর সন্ধান করার পরামর্শ দিয়েছেন।
৩. শবে কদরের রাত সম্পর্কে বিশেষ কোনো বাণী
"আমি বের হয়ে এসেছিলাম তোমাদের শবে কদর সম্পর্কে জানানোর জন্য, কিন্তু দুই ব্যক্তির মধ্যে বিবাদের কারণে তা আমাকে ভুলিয়ে দেওয়া হলো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪৯)
রাসূলুল্লাহ (সা.) শবে কদর সম্পর্কে জানানোর উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, কিন্তু কিছু কারণবশত তা ভুলে গেছেন।
৪. লাইলাতুল কদর রাতের দোয়া
"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
রাসূলুল্লাহ (সা.) শবে কদরের রাতে ইবাদত করলে গুনাহ মাফ হওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
৫. দোয়া পড়ার নির্দেশনা
হজরত আয়েশা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, শবে কদরে কোন দোয়া পড়া উচিত?
রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেছিলেন:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি"
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।"
শবে কদর কি শেষ দশকের বেজোড় রাতে তালাশ করতে হয় ?
হ্যাঁ, শবে কদর (লাইলাতুল কদর) রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ (অনুসন্ধান) করা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) শবে কদর খুঁজে বের করার জন্য রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে ইবাদত করার পরামর্শ দিয়েছেন।
হাদিসের ভিত্তিতে:
১. রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
এই হাদিস দ্বারা বোঝা যায় যে, শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে একটি রাতেই হয়ে থাকে।
২. হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৪)
এই হাদিসে শবে কদরের রাতের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করা উচিত।
শবে কদরের রাত চেনার উপায়
শবে কদরের রাত চেনার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সুস্পষ্ট চিহ্ন নেই, তবে কিছু মৌলিক লক্ষণ এবং ইসলামী পরামর্শ রয়েছে যা এই রাতকে চেনার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে:
১. অন্ধকারের মধ্যে শান্তি ও শান্তির অনুভূতি
শবে কদরের রাত সাধারণত বিশেষভাবে শান্ত এবং স্বস্তিদায়ক হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"শান্তি, যা ফজর পর্যন্ত বিরাজমান।"
(সূরা আল-কদর, আয়াত ৫)
এই রাতের বিশেষ লক্ষণ হলো রাতের পুরো সময়টিতে শান্তি এবং প্রশান্তির অনুভূতি।
২. ফজরের সময় সূর্যের আলো
সূর্যের আলো শবে কদরের পরের দিনে বিশেষভাবে অমসৃণ বা সুর্যাস্তের মতো।
এক হাদিসে উল্লেখ আছে:
"শবে কদরের পরদিন সূর্য এমনভাবে ওঠে যেন তার মধ্যে কোন রশ্মি থাকে না।"
(মুসলিম, হাদিস: ২২৮৩)
এই হাদিস অনুযায়ী, শবে কদরের পরদিন সূর্যের আলো একটু ভিন্ন হয়, তবে এটি চেনার ক্ষেত্রে একমাত্র নির্ভরযোগ্য চিহ্ন নয়।
৩. নামায ও ইবাদতের উৎসাহ
শবে কদর রাতের আগমনে মুসলমানরা অত্যধিক উৎসাহ এবং ইবাদতে মনোযোগী হন।
ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া এবং অন্যান্য নেক আমল করার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
৪. বিশেষ দোয়া
হজরত আয়েশা (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মাধ্যমে শবে কদরের দোয়া শিখেছিলেন:
"আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা'ফু আন্নি"
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫১৩)
অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, আমাকে ক্ষমা করুন।"
শবে কদরের রাতে এই দোয়া পড়লে বিশেষ বরকত আশা করা যায়।
৫. শবে কদরের রাত অনুসন্ধান
শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে ঘটে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
"তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান করো।"
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
এই রাতগুলোতে অধিক ইবাদত করা এবং শবে কদরের সন্ধান করা উচিত।
শবে কদরের রাতে কি ভাগ্য লেখা হয়
শবে কদরের রাতে, মুসলিম বিশ্বাস অনুযায়ী, সারা বছরের ভাগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি লেখার জন্য আসমানে ফয়সালা করা হয়। এই রাতে, আল্লাহ তাআলা সূর্যাস্ত থেকে ভোর পর্যন্ত পৃথিবীর কাছে তাত্ক্ষণিকভাবে সকল মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করেন। এটি ইসলামিক ক্যালেন্ডারের ২১, ২৩, ২৫, ২৭, অথবা ২৯ তারিখে হতে পারে, তবে অনেকেই ২৭ তারিখকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।
শবে কদরকে বিশেষভাবে নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত এবং দোয়া করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাত হিসেবে গণ্য করা হয়।
শবে কদর সম্পর্কে শেষ কথা
শবে কদরের রাত শেষ হয় ফজরের আযানের সময়। এই রাতটি ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিল হয়েছিল এবং রাতটি বিশেষভাবে আল্লাহর রহমত ও বরকতের রাত হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই, এই রাতের শেষ পর্যন্ত নফল নামাজ, দোয়া এবং কোরআন তেলাওয়াত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
Comments
Post a Comment