UK সিজনাল ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হলে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
পোর্টাল প্রবেশ: প্রথমে UK Visas and Immigration (UKVI) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান। এখানে আপনি ভিসার আবেদন ফর্মটি পাবেন।
ভিসা টাইপ নির্বাচন: সিজনাল ওয়ার্কার ভিসার জন্য আবেদন করতে, আপনাকে সঠিক ভিসার টাইপ নির্বাচন করতে হবে। এটি সাধারণত "Seasonal Worker visa" হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
নথিপত্র প্রস্তুত: আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করুন, যেমন পাসপোর্ট, ফটো, এবং যদি আপনি কোন নির্দিষ্ট চাকরি পেতে যাচ্ছেন তাহলে সেই চাকরির অফার লেটার।
অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ: ফর্মটি পূরণ করুন এবং আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, চাকরির বিবরণ, এবং ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন।
ফি পরিশোধ: আবেদন ফর্ম পূরণের পরে আপনাকে আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে। ফি পরিমাণ ভিসার ধরণ এবং আবেদনকারীর দেশের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
বায়োমেট্রিকস এবং সাক্ষাৎকার: আপনার আবেদন জমা দেওয়ার পরে, আপনাকে সম্ভবত বায়োমেট্রিক্স (আঙুলের ছাপ এবং চিত্র) দিতে হবে এবং সম্ভবত একটি সাক্ষাৎকারের জন্য যেতে হতে পারে।
অপেক্ষা এবং সিদ্ধান্ত: আবেদন জমা দেওয়ার পরে, আপনি আপনার ভিসার সিদ্ধান্ত পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করবেন। সাধারণত এটি কিছু সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিতে পারে।
ভিসা কাকে বলা হয়
ভিসা হল একটি সরকারী অনুমোদন বা অনুমতি যা একটি দেশের সরকার অন্য দেশের নাগরিককে তার দেশে প্রবেশ, থাকাবাস, বা কাজ করার অধিকার প্রদান করে। এটি সাধারণত একটি স্টিকার বা সিল হিসেবে পাসপোর্টে মুদ্রিত থাকে।
ভিসার বিভিন্ন ধরণ রয়েছে, যেমন:
টুরিস্ট ভিসা: পর্যটক হিসেবে দেশের ভেতরে সীমিত সময়ের জন্য অবস্থান করার অনুমতি দেয়।
স্টুডেন্ট ভিসা: শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশের ভেতরে পড়াশোনার অনুমতি দেয়।
ওয়ার্ক ভিসা: চাকরি করার জন্য একটি দেশের ভেতরে কাজ করার অনুমতি দেয়।
ইমিগ্রেন্ট ভিসা: স্থায়ীভাবে থাকার জন্য বা নাগরিকত্ব পাওয়ার উদ্দেশ্যে প্রবেশের অনুমতি দেয়।
প্রত্যেক ভিসার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং শর্তাবলী থাকে, যা আবেদনকারীকে পূরণ করতে হয়।
uk সিজনাল ভিসা অনলাইনে কিভাবে আবেদন করবো ?
UK সিজনাল ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
UKVI ওয়েবসাইটে যান:
UK Visas and Immigration (UKVI) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান: UK Government Visa and Immigration
সিজনাল ওয়ার্কার ভিসা নির্বাচন:
"Seasonal Worker visa" নির্বাচন করুন।
অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন:
আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথিপত্রের জন্য একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন অথবা লগইন করুন।
আবেদন ফর্ম পূরণ করুন:
অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন। এখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, চাকরি সম্পর্কিত তথ্য এবং ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় বিস্তারিত প্রদান করতে হবে।
ডকুমেন্ট আপলোড:
প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করুন, যেমন পাসপোর্টের কপি, চাকরির অফার লেটার, ছবি ইত্যাদি।
ফি পরিশোধ:
আবেদন ফি অনলাইনে পরিশোধ করুন। ফি পরিমাণ ভিসার ধরণ এবং আবেদনকারীর দেশের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
বায়োমেট্রিক্স ও সাক্ষাৎকার:
আবেদন জমা দেওয়ার পর, আপনার স্থানীয় ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে (VAC) গিয়ে বায়োমেট্রিক্স (আঙুলের ছাপ এবং ছবি) দিন। কিছু ক্ষেত্রে, সাক্ষাৎকারের জন্যও ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অপেক্ষা করুন:
আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে, আপনার ভিসার সিদ্ধান্ত পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। সাধারণত, এটি কিছু সপ্তাহ সময় নিতে পারে।
ভিসা কত প্রকার ও কি কি ?
ভিসা বিভিন্ন উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকারে বিভক্ত করা যেতে পারে। এখানে কিছু সাধারণ ভিসার প্রকার উল্লেখ করা হলো:
টুরিস্ট ভিসা (Tourist Visa):
পর্যটন বা ভ্রমণের জন্য দেওয়া হয়। সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশের ভেতরে থাকার অনুমতি দেয়।
স্টুডেন্ট ভিসা (Student Visa):
শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রদান করা হয়। এটি পড়াশোনার সময়কাল পর্যন্ত বৈধ থাকে।
ওয়ার্ক ভিসা (Work Visa):
একটি নির্দিষ্ট চাকরি বা কাজ করার জন্য দেওয়া হয়। এটি সাধারণত কর্মসংস্থানের শর্তের ওপর নির্ভর করে।
বিজনেস ভিসা (Business Visa):
ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে প্রবেশের জন্য দেওয়া হয়, যেমন ব্যবসায়িক সভা বা চুক্তি সম্পাদন।
ফ্যামিলি ভিসা (Family Visa):
পরিবারের সদস্যদের জন্য, যারা ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট দেশে বসবাস করছেন। এটি সাধারণত পারিবারিক পুনর্মিলনের জন্য হয়।
ইমিগ্রেন্ট ভিসা (Immigrant Visa):
স্থায়ীভাবে বসবাস বা নাগরিকত্ব অর্জনের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়। এটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী বা স্থায়ী প্রবেশের জন্য হয়।
ট্রানজিট ভিসা (Transit Visa):
একটি দেশ দিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভিসা। সাধারণত খুব ছোট সময়ের জন্য বৈধ থাকে।
ডিপ্লোমেটিক ভিসা (Diplomatic Visa):
কূটনৈতিক উদ্দেশ্যে দেয়া হয়, যেমন সরকারী সফর বা কূটনৈতিক মিশন।
জব সিকিউরিটি ভিসা (Job Seeker Visa):
একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চাকরি খুঁজতে দেওয়া হয়। এটি সাধারণত নির্দিষ্ট দেশের ভেতরে কাজ খোঁজার জন্য হয়।
হিউম্যানিটারিয়ান ভিসা (Humanitarian Visa):
মানবিক কারণে, যেমন আশ্রয় প্রার্থনার জন্য দেওয়া হয়।
ভিসা করতে প্রয়োজনীয় কাগজ -পত্র সমূহ
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র দেশের প্রকার ও ভিসার ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। তবে, সাধারণভাবে নিম্নলিখিত নথিগুলির প্রয়োজন হতে পারে:
পাসপোর্ট:
বৈধ পাসপোর্ট যা আপনার আবেদনকালে কমপক্ষে ৬ মাস বৈধ থাকে এবং আপনার ভ্রমণের জন্য পর্যাপ্ত ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকে।
আবেদন ফর্ম:
অনলাইনে পূরণ করা বা প্রিন্ট করে পূরণ করা আবেদন ফর্ম।
ফটো:
সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি, যা ভিসার জন্য নির্দিষ্ট নির্ধারিত মাপ অনুসারে হতে হবে।
আবেদন ফি:
ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ।
ভিসার উদ্দেশ্য সম্পর্কিত নথি:
টুরিস্ট ভিসা: টিকিটের কপি, হোটেল বুকিং বা অবস্থানের ঠিকানা, এবং ভ্রমণ পরিকল্পনার বিবরণ।
স্টুডেন্ট ভিসা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি গ্রহণের চিঠি, শিক্ষার প্রোগ্রাম সম্পর্কিত বিস্তারিত।
ওয়ার্ক ভিসা: চাকরির অফার লেটার, কাজের চুক্তি, অথবা নিয়োগকর্তার চিঠি।
অর্থনৈতিক স্থিতি প্রমাণ:
ব্যাংক স্টেটমেন্ট, আয়কর রিটার্ন, বা অন্য কোনো অর্থনৈতিক নথি যা প্রমাণ করে যে আপনি আপনার ভ্রমণ বা অবস্থান ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম।
যাত্রার পরিকল্পনা:
আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনার বিস্তারিত বিবরণ, যেমন যাত্রার তারিখ এবং গন্তব্য।
স্বাস্থ্য ও বীমা নথি:
কিছু ভিসার জন্য স্বাস্থ্য সনদপত্র এবং/অথবা ভ্রমণ বীমার প্রমাণ প্রয়োজন হতে পারে।
ব্যক্তিগত পরিচয়:
জাতীয়তা, বিবাহিত অবস্থা, এবং পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে তথ্য।
অন্য কোনো নির্দিষ্ট নথি:
কিছু ভিসার জন্য অতিরিক্ত নথির প্রয়োজন হতে পারে, যেমন সিভি, অভিজ্ঞতার সনদপত্র, বা বিশেষ অনুমতি।
ভিসা আবেদন ফি কত টাকা ?
ভিসা আবেদন ফি বিভিন্ন ভিসার ধরন এবং আবেদনকারীর দেশের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণত, ভিসার ফি কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন শাখায় বিভক্ত থাকে, যেমন:
টুরিস্ট ভিসা:
সাধারণত (প্রায় ১০,৫০০ - ১২,৫০০ টাকা)।
স্টুডেন্ট ভিসা:
সাধারণত (প্রায় ৩৭,০০০ টাকা)।
ওয়ার্ক ভিসা:
প্রকারের ওপর নির্ভর করে, (প্রায় ২৬,০০০ - ১,৫০,০০০ টাকা) হতে পারে।
বিজনেস ভিসা:
সাধারণত (প্রায় ১০,৫০০ - ৩৫,০০০ টাকা)।
ফ্যামিলি ভিসা:
সাধারণত (প্রায় ১,৬০,০০০ টাকা)।
ইমিগ্রেন্ট ভিসা:
প্রকারের ওপর নির্ভর করে, (প্রায় ১,১০,০০০ - ৩,৫০,০০০ টাকা) হতে পারে।
আমাদের শেষ কথা
ভিসা সম্পর্কে শেষ কথা হিসেবে, এখানে কিছু মূল পয়েন্ট তুলে ধরা হলো:
ভিসার প্রকার: বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকারের ভিসা রয়েছে, যেমন টুরিস্ট, স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক, বিজনেস, ফ্যামিলি, ইমিগ্রেশন ইত্যাদি।
প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র: পাসপোর্ট, আবেদন ফর্ম, ছবি, অর্থনৈতিক প্রমাণ, ভিসার উদ্দেশ্য সম্পর্কিত নথি ইত্যাদি। প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্রের তালিকা ভিসার প্রকার ও দেশের নিয়মাবলী অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।
ফি: ভিসার ফি প্রকার ও আবেদনকারীর দেশের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। সাধারণভাবে, এটি কিছু হাজার টাকা থেকে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
আবেদন প্রক্রিয়া: অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ, প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়া, ফি পরিশোধ, এবং বায়োমেট্রিক্স বা সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়।
আবেদন করা: আবেদন করার আগে সব নিয়মাবলী ও প্রয়োজনীয় তথ্য ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে।
Comments
Post a Comment